ঢাকার বাইরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদেরও স্মরণ করতে হবে ড. হারুন রশীদ
প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২

উদয়ের পথে শুনি কার বাণী,
‘ভয় নাই, ওরে ভয় নাই—
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।’
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
একটি সমাজ বা রাষ্ট্রে এই নক্ষত্রসম মানুষরাই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যান। এ কারণে তারা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শোষণ, বৈষম্যসহ নানা নিপীড়নের প্রতিবাদ আসে বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকেই। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে যা পরবর্তী সময়ে স্বাধিকার আন্দোলনে রূপ নেয়। বুদ্ধিজীবীরা এমন একটি সংস্কৃতি নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, যা পরাধীনতার অন্ধকার থেকে দেশকে নিয়ে যাবে আলোর ভুবনে। সেই আলোর পথে হাঁটতেই বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধিকার আন্দোলনে। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে লাল সবুজের পতাকা।
স্বাধীনতার ৫১ বছরেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি জাতীয় কমিটির মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করার উদ্যোগ নিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তাছাড়া শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী হত্যার স্মৃতিচারণ থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলাপিডিয়ার হিসাব মতে, মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে সারাদেশে ১ হাজার ১১১ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪৯ জন ছিল ঢাকায়। কিন্তু ঢাকার বাইরের জেলাগুলোর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সেভাবে স্মরণ করা হয় না।
আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বিজয়ের ঊষালগ্নে পরাজয় অত্যাসন্ন জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দেশের বরেণ্য ব্যক্তিদের হত্যায় মেতে ওঠে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেছে বেছে ধরে নিয়ে আসা হয় সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।
এরপর নির্মম পৈশাচিকতায় তাদের হত্যা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল জাতিকে মেধাশূন্য করা। স্বাধীনতা পেয়েও বাঙালি জাতি যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই নীলনকশা বাস্তবায়ন করাই ছিল বুদ্ধিজীবী হত্যার হীন উদ্দেশ্য। এই দিবসে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে সেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের, যারা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।
একাত্তরের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে হত্যা করা হয় জগন্নাথ হল, রায়েরবাজারের নদীতীর ও মিরপুরের কয়েকটি স্থানে। ডা. ফজলে রাব্বী, আবদুল আলীম চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, সেলিনা পারভীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সন্তোষ ভট্টাচার্য, সিরাজুল হক, চিকিৎসক গোলাম মুর্তোজা, আজহারুল হক, হুমায়ুন কবীর, মনসুর আলীসহ অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয় এ সময়।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে এবং যুদ্ধ চলাকালে হত্যা করা হয় জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, গোবিন্দ চন্দ্র দেবসহ আরও অনেক বুদ্ধিজীবীকে। মুনীর চৌধুরী, আলতাফ মাহমুদ ও শহীদুল্লা কায়সারও একইভাবে হত্যার শিকার হন। এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সর্বপ্রথম শিকার হয়েছিলেন অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা।
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি জাতীয় কমিটির মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করার উগ্যোগ নিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তাছাড়া শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী হত্যার স্মৃতিচারণ থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে।
বাংলাপিডিয়ার হিসাব মতে, মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে সারাদেশে ১ হাজার ১১১ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪৯ জন ছিল ঢাকায়। কিন্তু ঢাকার বাইরের জেলাগুলোর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সেভাবে স্মরণ করা হয় না।
বাংলাপিডিয়ার হিসাব মতে, কুমিল্লায় মারা গেছে ৮৬ জন, যশোরে ৯১, রংপুরে ৭২, দিনাজপুরে ৬১, পাবনায় ৫৩, ময়মনসিংহে ৭৫, ফরিদপুরে ৪৩, চট্টগ্রামে ৬২, খুলনায় ৬৫, বরিশালে ৭৫ এবং রাজশাহীতে ৫৪ জনসহ সব মিলিয়ে বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা ১ হাজার ১১১ জন। গবেষকদের মতে, এ তালিকাও অসম্পূর্ণ। ইতিহাসের স্বার্থেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন ও তাদের স্মৃতি সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
একটি সমাজ বা রাষ্ট্রে এই নক্ষত্রসম মানুষরাই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যান। এ কারণে তারা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শোষণ, বৈষম্যসহ নানা নিপীড়নের প্রতিবাদ আসে বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকেই। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে যা পরবর্তী সময়ে স্বাধিকার আন্দোলনে রূপ নেয়।
রাজনৈতিক আন্দোলনে গতি আনে সাংস্কৃতিক আন্দোলন। বুদ্ধিজীবীরা এমন একটি সংস্কৃতি নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, যা পরাধীনতার অন্ধকার থেকে দেশকে নিয়ে যাবে আলোর ভুবনে। সেই আলোর পথে হাঁটতেই বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধিকার আন্দোলনে। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে লাল সবুজের পতাকা।
স্বাধীন দেশে পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জাতিকে দিকভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছে। ভুলিয়ে দিতে চেয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। কিন্তু ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হতে পারেনি। বাঙালি জাতি আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেরিতে হলেও মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারীর বিচার হচ্ছে।
আলবদর নেতা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে। অন্যদেরও বিচার চলছে। মানবতাবিরোধী অপরাধী সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের মধ্যদিয়ে জাতি অনেকটাই গ্লানিমুক্ত হয়েছে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে নতুন করে শপথ নিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি যাতে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। লিপ্ত হতে না পারে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে হবে। শোষণ, বঞ্চনাহীন, ক্ষুধামুক্ত একটি সমৃদ্ধ সংস্কৃতিবান জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। বাস্তবায়ন করতে হবে বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন। তবেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো সার্থক হবে।
লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট।
drharun.press@gmail.com
- পাটগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আসামী পলাতক
- সরকারি খরচে সাত বছরে হজে গেছেন ১৯১৮ জন
- লালমনিরহাটে ৭০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই পুলিশ কনস্টেবল আটক
- পুতিন জীবিত কি না, তা নিয়ে সন্দেহ জেলেনস্কির
- ডিমলায় সরকারি প্রণোদনার সরিষা বীজে কৃষকের মাথায় হাত
- বিশ্ব ইজতেমায় লাখো মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়
- শীত আরও বাড়তে পারে
- ঘন কুয়া ও শৈত্য প্রবাহে লালমনিরহাটের জনজীবন স্থবির
- পাটগ্রামে ফেসবুকে ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করায় যুবক আটক
- নীলফামারীতে মিথ্যা মামলা করায় বাদী এখন শ্রীঘরে
- জুনেই ঢাকায় আসছে মেসির আর্জেন্টিনা
- শরীয়তপুরের জাজিরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬
- একদিনে ইউক্রেনের ৬ শতাধিক সৈন্যকে হত্যার দাবি রাশিয়ার
- তারাগঞ্জে হতদরিদ্র ও শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ
- দিনাজপুরে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড
- অব্যাহত থাকতে পারে শৈত্যপ্রবাহ ও তীব্র শীত
- পাটগ্রামে ইজতেমা মাঠে এক মুসল্লির মৃত্যু
- লালমনিরহাটে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হল ইজতেমা
- ২০২৩ সালের বিশ্ব ইজতেমা সুন্দর ও সফল হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- শীতার্তদের পাশে দাঁড়াই
- পাটগ্রামে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন এক যুবক
- ডিমলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়ম,তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিককে হুমকি
- দিল্লিতে তাপমাত্রা নামলো ১ দশমিক ৮ ডিগ্রিতে
- রংপুরে সমতলের চা শিল্প নামে মোবাইল অ্যাপ উন্মুক্ত
- বছরজুড়ে রংপুরের আলোচনায় ছিল সে সব বিষয়
- পাঠ্যপুস্তকের ঘাটতি নিয়েই বই উৎসব রোববার
- বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে রয়েছে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী
- হাতীবান্ধায় সাংবাদিক রিকোর মায়ের জানাজা
- রংপুরে জামায়াতের মিছিল থেকে আটক ৯
- ফুটবল কিংবদন্তি পেলে আর নেই
- নীলফামারীতে মিথ্যা মামলা করায় বাদী এখন শ্রীঘরে
- ডিমলায় সরকারি প্রণোদনার সরিষা বীজে কৃষকের মাথায় হাত
- লালমনিরহাটে ৭০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই পুলিশ কনস্টেবল আটক
- শরীয়তপুরের জাজিরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬
- শীত আরও বাড়তে পারে
- পুতিন জীবিত কি না, তা নিয়ে সন্দেহ জেলেনস্কির
- জুনেই ঢাকায় আসছে মেসির আর্জেন্টিনা
- পাটগ্রামে ফেসবুকে ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করায় যুবক আটক
- বিশ্ব ইজতেমায় লাখো মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়
- ঘন কুয়া ও শৈত্য প্রবাহে লালমনিরহাটের জনজীবন স্থবির
- পাটগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আসামী পলাতক
- সরকারি খরচে সাত বছরে হজে গেছেন ১৯১৮ জন